সাম্প্রতিক সময়ে অন্তত দুটি ঘটনা সরাসরি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে অত্যন্ত ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। একটি হচ্ছে ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে বাংলাদেশের আউটলুক ঘোষণা এবং দ্বিতীয়টি যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি সহজীকরণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত। তারপরও যুক্তরাষ্ট্র কেন বাংলাদেশ নিয়ে তাদের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করলো সেটি ভাবিয়ে তুলেছে নীতি-নির্ধারকদের।
নতুন নীতি নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্যে বলা হচ্ছে, ‘বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণাটিকে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সকল পর্যায়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের দ্ব্যর্থহীন প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করছে।’ অবশ্য একই সঙ্গে সতর্কবার্তা হিসাবে জানিয়েছে ‘তবে বাংলাদেশ আশা করে যে এই ভিসা নীতি যথেচ্ছভাবে প্রয়োগের পরিবর্তে বস্তুনিষ্ঠতার সাথে অনুসরণ করা হবে।’
মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য অনুযায়ী বলা যায়— বিষয়টি নিয়ে আগ্রাসী প্রতিক্রিয়া দেখাতে আগ্রহী নয় সরকার।
এ বিষয় জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক একজন কূটনীতিক বলেন, ‘এটি পরিষ্কার যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি নিয়ে আগ্রাসী প্রতিক্রিয়া দেখাবে না সরকার। তার বদলে গোটা বিষয়টি নিয়ে আরও চিন্তা-ভাবনা করে সতর্ক পদক্ষেপ নেবে বলে মনে হচ্ছে।’
সোমালিয়া বা নাইজেরিয়ার মতো দেশের ওপর নতুন ভিসানীতি প্রয়োগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই দুই দেশের সঙ্গে বাংলাদেশকে এক কাতারে ফেলে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং গোটা বিষয়টিকে কীভাবে দেখেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই দুই দেশের সঙ্গে তুলনীয় এমন কোনও কাজ করেনি বাংলাদেশ। এছাড়া ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক ঘোষণা এবং তুলা আমদানি জটিলতা নিরসনে সিদ্ধান্ত একদম সাম্প্রতিক ঘটনা। এরপরও যদি যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের মনোভাব পরিলক্ষিত হয় তবে বুঝতে হবে একে অপরকে বোঝার ক্ষেত্রে কোথাও বড় ধরনের ঘাটতি হচ্ছে।’
নতুন আইন
গত বছর যুক্তরাষ্ট্র তাদের ন্যাশনালিটি ও ইমিগ্রেশন আইনে ভিসানীতিতে নতুন সংযোজন আনে। ওই সংযোজনের আওতায় কোনও দেশ যদি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বাধা হয় বা সেটির সহযোগী হয় তবে ভিসা না পাওয়ার তালিকায় পড়ে যাওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত নাইজেরিয়া ও সোমালিয়ার ওপর নতুন ভিসানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে এবং বাংলাদেশ এক্ষেত্রে তৃতীয়।
বিষয়টি গত ৩ মে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারত্ব সংলাপে মৌখিকভাবে জানানো হয়।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম জানান যে ‘যুক্তরাষ্ট্র ৩ মে একটি বৈঠকে মৌখিকভাবে এটি জানিয়েছিল। তাদের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছিল— এটি যেন বাংলাদেশ প্রকাশ না করে। কারণ তারা বিষয়টি এমনভাবে উপস্থাপন করতে চেয়েছেন যাতে করে যেন ভুল বার্তা না যায়। আমরা অপেক্ষা করছিলাম তারা কবে এটি ঘোষণা করবে।