মশা নিধনে খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রতি ওয়ার্ডে ফগার মেশিনে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। এর ফলে পুরো এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে। এই ধোঁয়া থেকে সৃষ্ট দূষণে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
নগরীর বাসিন্দারা বলছেন, ধোঁয়ায় পুরো এলাকা অন্ধকার হয়ে যায়। বাসাবাড়িতে ঢোকে। গন্ধে ঘরে থাকা যায় না। সবার চোখেমুখে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। এ অবস্থায় বিশেষ করে শিশুরা ছোটাছুটি করতে থাকে। ছোটবড় সবার স্বাস্থ্যের জন্যই এই ধোঁয়া ক্ষতিকর।
সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, এটি অবশ্যই স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। আগামীতে এক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।
এই ধোঁয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে বলে জানালেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্বিবদ্যালয়ের ইউআরপি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তফা সারোয়ার। তিনি বলেন, ‘ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধ ছিটানোর একটা নিয়ম আছে। সেটা ফলো করলে ওষুধটা মূল জায়গায় পড়ে। এটি ফলো করা জরুরি। দ্বিতীয়ত একাধিকবার এই ধোঁয়ার সংস্পর্শে গেলে মাথা ঝিমঝিম করতে পারে। প্রতিনিয়ত সংস্পর্শে গেলে শারীরিক ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি। এটি ওষুধ ছিটানোর সময় কাছে গিয়েও হতে পারে, বা ছিটানোর পর ঘরের জানালা দিয়ে ভেতরে ঢুকেও হতে পারে। এক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।’
মশার ওষুধ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করেছেন খুলনা বিভাগীয় পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘শিশুদের জন্য তো বটেই; বড়দের জন্যও ক্ষতিকর। তাই ফগার মেশিনে ওষুধ ছিটানোর সময় সতর্ক হতে হবে। সিটি করপোরেশনের কর্মীদেরও সতর্ক হতে হবে।’
পথশিশুদের নিয়ে কাজ সংগঠন মাসাস’র নির্বাহী পরিচালক শামীমা সুলতানা শিলু বলেন, ‘এক্ষেত্রে সচেতনতার বিকল্প নেই। এটি কেবল দায়িত্বশীলরাই করবে—এমন ভাবা ঠিক নয়। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল, নাগরিক নেতা, পরিবার অর্থাৎ সবার সচেতন হওয়া প্রয়োজন। মশার ওষুধ ক্ষতিকর আমরা সবাই জানি। তারপরও অসচেতনতার কারণেই গুরুত্ব দিই না। যে কারণে ওষুধ ছিটানোর সময় শিশুরা ধোঁয়াকে খেলনা ভেবে খেলায় মেতে ওঠে। তাদের নিষেধ করতে হবে।’