রোহিঙ্গা, কানেক্টিভিটি, ইন্দো-প্যাসিফিক ও বৈশ্বিক উদ্যোগ নিয়ে বৈঠক হয়েছে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে। শনিবার (২৭ মে) পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও চীনের সফররত ভাইস মিনিস্টার সান ওয়েইডংয়ের মধ্যে দুই দফা বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়।
ভারত ও পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী সান ওয়েইডংকে গত নভেম্বরে এশিয়া বিষয়ক ভাইস মিনিস্টার হিসেবে পদায়ন করা হয়। ঢাকায় ভাইস মিনিস্টার হিসেবে এটি তার প্রথম সফর। তবে ১০ বছর আগে তিনি ভিন্ন পদে বাংলাদেশ সফর করেছেন।
পররাষ্ট্র সচিব-ভাইস মিনিস্টারের প্রথম দফা বৈঠকে রোহিঙ্গা, ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক ও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ে আলোচনা হয়। দ্বিতীয় বৈঠকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, কনস্যুলার সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ও রাজনৈতিক সফর বিষয়ে আলোচনা হয়।
এবারের সফরে অন্তত তিনটি নতুন বিষয়ে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে দুই দেশের মধ্যে কনস্যুলার সংলাপ ও জননিরাপত্তা সংলাপ আয়োজনের বিষয়ে দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিরক্ষা বিভাগের বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে স্টাফ পর্যায়ে আলোচনার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কয়েকটি বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ প্রকল্পে অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাধা করার বিষয়ে উভয় পক্ষ একমত হয়েছে। চীনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়েছে ভবিষ্যতে বিদেশে কোনও ধরনের কয়লা প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে না বেইজিং।
রোহিঙ্গা সংকট
এবারের বৈঠকে রোহিঙ্গা বিষয়টি গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একাধিক সূত্র জানায়, ভাইস মিনিস্টারের সফর মূলত গত ১৮ এপ্রিল বাংলাদেশ-চীন রোহিঙ্গা বৈঠকের ফলোআপ। একই সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
একটি সূত্র জানায়, নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ইতোমধ্যে সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে সমঝোতা করাতে পেরেছে চীন। এরপর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে প্রমাণ করতে পারলে সেটি চীনের জন্য ভালো একটি অর্জন হবে। সে জন্য চীনের বিশেষ আগ্রহ আছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে। এ ছাড়া তারা এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা চায়।
জিডিআই
গত বছরের আগস্টে চীনের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ঢাকা সফরের সময় জিডিআই বিষয়ে বাংলাদেশকে অবহিত করেন।
একটি সূত্র জানায়, গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট উদ্যোগে (জিডিআই) বাংলাদেশ যুক্ত হোক, চীন এটি চায় এবং এ বিষয়ে তারা বাংলাদেশকে অনুরোধ করেছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে আন্তমন্ত্রণালয় আলোচনা হচ্ছে।
সফর
উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক সফরে চীনের আগ্রহ বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফর করেছিলেন। এরপর আর কোনও উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক সফর হয়নি।
সূত্র আরও জানায়, এ বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছে বেইজিং কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে কানেক্টিভিটির আওতায় একটি প্রকল্প নিয়েও কথা হয়েছে দুই পক্ষের মধ্যে।